করোনা ভাইরাস ও সোশ্যাল মিডিয়ার দৌড়।


২০০৩ সালে সারস ভাইরাসে এ্যাটাক করেছিলো প্রায় ২৬ টি দেশ। মৃত্যুহার ছিলো ১০%।
২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লুতে ৫৭ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হয়। মৃত্যুহার ৪.৫%
২০১৪ সালে ইবোলায় মৃত্যুহার ২৫% । মারা যায় ১১,৩১০ জন।
আর ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুহার মাত্র ২%। মারা গেছে এ পর্যন্ত ৩০৫২ জন।

এই যখন ঘটনা। তখন করোনা ভাইরাসে দুনিয়া ব্যাপি এতো আতঙ্ক ছড়ালো কেন? কেন ইতালি, চায়না, হংকং এর এয়ারপোর্ট একেবারে জনশূন্য হয়ে গেলো। গ্রোসারি মার্কেট, হোলসেলের দোকান একেবারে স্টক শূণ্য হয়ে গেলো। কেন প্রায় তিন ট্রিলিয়ন ডলার শেয়ার মার্কেটে রাতারাতি ক্রাস হয়ে গেলো। কেন ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিতে ব্যাপক ধ্বস নামলো?

কারণ হলো সংবাদ কনজিউমের পুরো ন্যাচারটিই দুনিয়াব্যাপি খুব দ্রত বদলে গেছে।

২০০৩ সালে ফেসবুক , হোয়াটসআপ ছিলোনা। যখন সারস ভাইরাসে ২৬ টি দেশ আক্রান্ত হয়।
২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লুর সময় দুনিয়াব্যাপি ফেসবুক ব্যবহারকারী ছিলো মাত্র ১৫০ মিলিয়ন।
২০১৪ সালে ইবোলার সময় হোয়াটস্যাপ ব্যবহার কারী মাত্র ২৫০ মিলিয়ন।
আর ২০২০ সালে অন্যান্য মিডিয়া বাদ শুধু ফেসবুক আর হোয়াটসআপ ব্যবহার করছে লাখ, কোটি, মিলিয়ন না। প্রায় চার বিলিয়ন মানুষ।

সোসালমিডিয়ার এই শক্তি ব্যাপক। প্রতি সেকেণ্ডেই খবর ছড়াচ্ছে। কথায় বলে দুঃসংবাদ ঘোড়ার আগে ছুটে। একটা ভাইরাসে একজন মানুষের মৃত্যু সংবাদ এখন মুহুর্তেই বিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। সুতরাং মানুষতো আতংকিত হবেই। দূর বলতে এখন আর কিছুই নেই। চায়নার উহানের দূর্ঘটনাকে মনে হবে আপনার পাশের বেডরুমেই ঘটছে। মিডিয়া পাওয়ারই দুনিয়াব্যাপি মানুষকে আতংকিত করেছে এবং গ্লোবাল ইকোনিমিতে ধ্বস নামিয়েছে।

ওয়ার্ল্ড হেলথের অর্গের মতে-সাবধান হোন। আতংকিত হবেন না।
আপনার বয়স যদি ৫০ এর নীচে হয় তবে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ০.০২%
৫০ এর ওপরে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ১.৫% তাও যদি শ্বাসকষ্ট থাকে। যত লোক মারা গেছে তাদের ৯৮% এর বয়স ৮০ এর ওপরে।

আর আমরাতো পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত নগরের বাতাস প্রতি সেকেণ্ডে গ্রহণ করে , ফরমালিন যুক্ত খাবার দিনে তিনবেলা পেটে চালান করে, ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের গোডাউনে বাস করে-মশা মাছির উপদ্রবকে নিত্য সাথী করে আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে ইস্পাতের মতো শক্ত করে নিয়েছি। আমাদের সাথে পাল্লা দিতে হলে বরং করোনা ভাইরাসকেই মাস্ক পরে আগাতে হবে। সুতরাং এতো পেনিক হওয়ার কিছু নেই।

ভাইরাস যদি বাতাসে উড়তো আর যে ভাবে পেনিক ছড়িয়েছে সেভাবে সংক্রমিত হতো আর সংক্রমনের সাথে সাথে মানুষ মারা যেতো তবে দেশে দেশে এতোক্ষণে লাশের পাহাড় হয়ে যেতো। তাই পেনিক হওয়া যেমন ঠিকনা। আবার একেবারে এটি খুব সিম্পল একটা ব্যাপাার এরকম ভেবে অবহেলা করে মৌজ মাস্তি করাও ঠিক না। কথায় বলে সাবধানের মার নেই। সাবধান হোন। কিন্তু পেনিক হবেন না। পেনিক ছড়াবেন না। শীত চলে গিয়ে উষ্নদিন শুরু হওয়ার সাথে সাথেই করোনার খেল খতম হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। বিপদ কেটে যাক। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সবাইকে, সব জাতিকে, সব মানুষকে হেফাজত করুন। আমিন।
Share This

0 Response to "করোনা ভাইরাস ও সোশ্যাল মিডিয়ার দৌড়।"

Post a Comment

AD