ইনসোমনিয়া এখনকার সময়ের সবচেয়ে পরিচিত সমস্যাগুলোর একটি। দীর্ঘদিন থেকে যারা অনিদ্রায় (insomnia) ভুগছেন এবং ক্রমাগত ঘুমাতে সমস্যা হচ্ছে তাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অনিদ্রায় (insomnia) ভোগার কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং এই রোগের লক্ষণও বুঝতে হবে, যাতে করে নিদ্রাহীনতার সমস্যা দূর করা সম্ভব হয়।
ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রার লক্ষণ
ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রার লক্ষণ
১। যদিও তারা ক্লান্তি বোধ করে কিন্তু তাদের ঘুমাতে অনেক সমস্যা হয়।
২। রাতে বার বার তাদের ঘুম ভেঙে যায়।
৩। পূর্ণ রাত্রি ঘুমের জন্য ঘুমের বড়ির উপর নির্ভর করে।
৪। সারাদিন তন্দ্রা ও অবসণ্ন বোধ।
৫। একটি নির্দিষ্ট কাজে মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে পড়া।
এই ধরনের লক্ষণগুলো স্বাভাবিক মানুষের জীবনে মাঝে মাঝে ঘটতে পারে কিন্তু যারা স্থায়ীভাবে এই ধরনের সমস্যায় ভুগেন তারাই ইনসোমনিয়ায় আক্রান্ত।
ইনসোমনিয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার সমাধান
১। আপনি যেখানে ঘুমাবেন তারচারপাশ যেন খুব নীরব ও শান্তিপূর্ণ থাকে যা আপনার ঘুমকে আরো নিবিড় করবে।শীতল সঙ্গীত শুনুন।যেখানে ঘুমাবেন সেখানে যেন কোনো গোলমাল বা উজ্জ্বল আলো না থাকে।
২। আরামদায়ক বিছানাপত্র আপনাকে সহজে ঘুম পাড়িয়ে দিবে। বিছানাপত্র যাতে অনেক ফাঁপা এবং নরম হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ঘাড় এবং মাথা সহায়ক যথেষ্ট বড় বালিশ হতে হবে যা কোনো অস্বস্তি ছাড়াই ঘুম নিয়ে আসবে।
৩। আপনি যদি আপনার শোবার ঘর ঘুমানোর সময় অন্ধকারচ্ছন্ন করে রাখেন তাহলে আপনে ভালোভাবে ঘুমাতে সক্ষম হবেন।
৪। শোবার ঘরে কিছু নির্দিষ্ট কর্মকান্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে, যেমনঃ
কোনো প্রকার তর্ক, বিতর্ক, ঝগড়া চলবে না।
কোনো টেলিভিশন থাকবে না।
কোনো কাজ করা যাবে না।
খাবার খাওয়া যাবে না।
৫। কমপক্ষে ঘুমাতে যাওয়ার দুই ঘন্টা আগে ক্যাফেইন গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা সাধারণত অতিরিক্ত ঘুম সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে সন্ধ্যার পর থেকে ক্যাফেইনজাতীয় পানীয় পান থেকে বিরত থাকা।দিন প্রতি মাত্র দুই কাপ ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান করা যাবে।
৬। ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রা ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদেরকে অবশ্যই অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকতে হবে, বিশেষ করে গভীর রাতে পান একেবারেই নিষিদ্ধ।
৭। যারা ইনসোমনিয়াতে ভুগছেন তাদের প্রতিদিন ঘুমের জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যারা নিয়ম মেনে শান্ত পরিবেশে প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান তারা খুব ভালো ঘুমাতে পারেন।সঠিক শয়নকাল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৮। যে সকল শিশুর ঘুমাতে সমস্যা হয় তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট গোসলের সময় ঠিক করতে হবে যা সাহায্যকারী পদক্ষেপ হিসাবে কাজে দিবে।উষ্ণ এবং শীতল গোসল শিশুদের স্নায়ুকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
৯। ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রা রোগীদের অবশ্যই প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে মধু অথবা বাদাম মিশানো এক গ্লাস দুধ পান করা উচিত।মধুর মধ্যে এক ধরনের প্রশান্তিদায়ক প্রভাব রয়েছে চিনির মত কিন্তু মধু চিনির থেকেও অনেক কম ক্ষতিকর ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য।
১০। যোগব্যায়ামের মাধ্যমে খুব সহজেই মানসিক চাপ, খন্ডিত উদ্বেগ দূর করা যায় যা খুব দ্রুত শরীর এবং মনকে শান্ত করে তুলে। বিভিন্ন যোগব্যায়াম চর্চা ধীরে ধীরে স্নায়ুকে শীতল করে তুলবে।
0 Response to "আর নয় নিদ্রাহীন রাত ।"
Post a Comment